শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন

আপডেট
রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে দিশেহারা স্বল্প আয়ের মানুষ

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে দিশেহারা স্বল্প আয়ের মানুষ

মোঃ হারিছ মিয়া, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের বড়বাজারে ১৩ মার্চ সোমবার জাতীয় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কাঁচাবাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। তারা দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। স্বল্প আয়ের মানুষের হাসি-কান্না অনেকটাই নির্ভর করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যের উপর। মূল্য কম থাকলে অথবা নিয়ন্ত্রনে থাকলে পেটভরে দু’মুঠো খাওয়া যায়। দ্রব্যমূল্যের মূল্য লাগামছাড়া হলে অনেক সময়ই না খেয়ে কাটাতে হয় স্বল্প আয়ের মানুষদের। গরু-ছাগলের মাংস সবার প্রিয় হলেও আকাশচুম্বী দামে স্বল্প আয়ের মানুষে এর স্বাদ নিতে পারে না। ফলে ব্রয়লার মুরগিই তাদের ভরসা। কিন্তু একমাসের ব্যবধানে সেই ব্রয়লারের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। যার ফলে এই ব্রয়লার মাংসও সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে গরিব মানুষদের।

মধ্যবিত্তরাও এখন চড়া দামে ব্রয়লার কিনতে হতাশায় ভুগছেন। এক সময়ে গরিবের ব্রয়লার মাংস এখন ধনীদের ক্রয়ের তালিকায় পরিণত হয়েছে। গতকাল কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ব্রয়লারসহ অন্য জাতের মুরগির দামে উর্ধ্বগতি। মাংসের অস্বাভাবিক দামের কারণে ক্ষুব্ধ সাধারণ ভোক্তারা। বাজারে আসা অনেক ক্রেতারা বলেন, আগে মাসে এক-দু’দিন গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া হতো। এই মধ্যে এসব মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা খাওয়া বাদ দিয়েছি। ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধিতে এটাও এখন খাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান বাজারে ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২৫০ টাকা। শুধু ব্রয়লারেই নয়, বাজারে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা, লেয়ার মুগির ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, গরু মাংস ৭০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দিনে দিনে সবধরণের নিত্যপন্যসহ মুরগির অস্বাভাবিক দামে হতাশ সাধারণ মানুষ।

কিশোরগঞ্জ বড়বাজারে শামীম নামের এক ভোক্তা জানান, এক মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগীর দাম দিগুন হয়েছে। আগে যারা গরুর মাংস কিনতেন তারা এখন ব্রয়লার কিনছেন। মিঠামইনে একাধিক পল্ট্রি খামারীরা বলেন, বাচ্চা-ফিড-ঔষুধ ও অন্য জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ খামার বন্ধ হয়েছে। তাই মানুষের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন হচ্ছে কম। এ কারণে দাম বেড়েছে অনেকটা। তবুও খামার ব্যবসায় ভাটা পড়ছে। তবে অনেক সবজির দাম কমে আসলেও বেশিরভাগ সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।

আর গ্রীষ্মের যে নতুন সবজি বাজারে এসেছে তাতে হাত দেয়ার জো নেই। প্রতিকেজি বেগুন ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পটোল ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতি হালি লেবু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও কমেনি আদা-রসুনের দাম। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৪০-২৮০ টাকা ও রসুন ১৬০-২২০ টাকা দরে। পাঙ্গাশ-তেলাপিয়া ছাড়া অন্য মাছের দামও কেজিপ্রতি ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দেখা যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ভবিষ্যতে পণ্যের বিশ্ববাজার পরিস্থিতি যতই স্বাভাবিক হয়ে আসুক না কেন এবং দেশে উৎপাদন যতই বৃদ্ধি পাক না কেন, বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা না থাকলে ভোক্তাদের দুর্বিসহ কষ্টের অবসান হবে না। যেহেতু বাজার তদারকি সংস্থার কোনো কোনা সদস্যের সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের যোগসাজশের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে, সেহেতু এক্ষেত্রে দুর্নীতি নির্মূলে সরকারকে এখনই জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |